মঙ্গলবার ৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৪শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

৫২৭ ভারতীয় খাদ্যপণ্যে ক্যানসার সৃষ্টিকারী রাসায়নিক পেয়েছে ইইউ

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ | প্রিন্ট

৫২৭ ভারতীয় খাদ্যপণ্যে ক্যানসার সৃষ্টিকারী রাসায়নিক পেয়েছে ইইউ

ভারতীয় দুই কোম্পানির পণ্যে ক্যানসার সৃষ্টিকারী রাসায়নিক ইথিলিন অক্সাইডের উপস্থিতি থাকায় নিষিদ্ধ করেছে হংকং ও সিঙ্গাপুর। এই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) রফতানি করা ৫২৭ ভারতীয় পণ্যেও মিলেছে এই রাসায়নিক। তবে এই রাসায়নিক ব্যবহার বন্ধে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি ইইউ।

গতকাল বুধবার (২৪ এপ্রিল) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ডেক্বান হেরাল্ডের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৪ সালের এপ্রিল পর্যন্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের খাদ্যনিরাপত্তা কর্তৃপক্ষ ভারতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ৫২৭টি পণ্যে ইথিলিন অক্সাইড খুঁজে পেয়েছে। এসবের বেশিরভাগই বাদাম এবং তিল বীজ (৩১৩), ভেষজ ও মসলা (৬০), ডায়েট জাতীয় খাদ্য (৪৮) এবং অন্যান্য খাদ্যপণ্য (৩৪)।

ইউরোপে রফতানি করা ভারতীয় এসব পণ্যের ৮৭টি চালান ইউরোপীয় ইউনিয়নের সীমান্তে আটকে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বাকি পণ্য বাজার থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইথিলিন অক্সাইড একধরনের রংহীন গ্যাস। ভারতীয় পণ্যগুলো কীটনাশক ও জীবাণুমুক্ত করতে এটি রাসায়নিক হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছিল। সাধারণত এই রাসায়নিক চিকিৎসা সরঞ্জাম জীবাণুমুক্ত করার কাজে ব্যবহার করা হয়। তবে খাদ্যদ্রব্যে ব্যবহার করা এই রাসায়নিক শরীরে প্রবেশ করলে তা অন্যান্য ক্যানসারের পাশাপাশি লিম্ফোমা এবং লিউকেমিয়ার ঝুঁকি তৈরি করে।

ইইউর সদস্য দেশগুলোতে খাদ্যনিরাপত্তা নিয়ে কাজ করা সংস্থা র‍্যাপিড অ্যালার্ট সিস্টেম ফর ফুড অ্যান্ড ফিডের (আরএএসএফএফ) তথ্য অনুযায়ী, ৫২৫টি খাদ্যদ্রব্য ও দুটি ফিড পণ্যে রাসায়নিকটি পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ৩৩২টি পণ্যের উৎস সরাসরি ভারত বলে উল্লেখ করা হয়েছে। আর বাকি খাদ্যপণ্য অন্যান্য দেশ থেকে গেলেও সেগুলোতে ভারতের ট্যাগ ব্যবহার করা হয়েছে।

ইউরোপে খাদ্যপণ্য পরীক্ষাকারী রামাইয়াহ অ্যাডভান্সড টেস্টিং ল্যাবের সিওও জুবিন জর্জ জোসেফ বলেছেন, সরাসরি ইথিলিন অক্সাইডের সংস্পর্শে আসা ছাড়াও খাদ্যপণ্যে মেলা আরও দুটি রাসায়নিক ভোক্তাদের জন্য অত্যন্ত সংবেদনশীল। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বিপজ্জনক ইথিলিন গ্লাইকল। কিছুদিন আগে আফ্রিকায় কাশির সিরাপের মধ্যে এই রাসায়নিক পাওয়া যায়। আফ্রিকায় এই সিরাপ খেয়ে অনেক শিশুর প্রাণহানি ঘটেছে।

ইথিলিন অক্সাইড চিকিৎসা সরঞ্জাম জীবাণুমুক্ত করার কাজে ব্যবহার করা হয়। কিন্তু এর বিকল্প বের করা জরুরি জানিয়ে জোসেফ জোর দিয়ে বলেছেন, ‘ভারতীয় পণ্যের গুণগত মান ও নিরাপত্তাবিষয়ক কর্তৃপক্ষ দ্য ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ডস অথোরিটি অব ইন্ডিয়ার (এফএসএসএআই) ভেবে দেখা উচিত বিকল্প জীবাণুনাশক হিসেবে গামা রশ্মির ব্যবহার করা যায় কি না। বিভিন্ন শিল্প-সংস্থাকে এ বিষয়ে ভাবতে উৎসাহ দেওয়া দরকার।’

ভারতের জেলা ভোক্তা ফোরামের সদস্য এক কর্মী বলেন, রফতানি পণ্যে এ ধরনের রাসায়নিকের উপস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। যেসব খাদ্যপণ্য বিদেশে রফতানি করা হয়, সেগুলো সবচেয়ে উৎকৃষ্ট মানের। আর এসব পণ্যের মান যদি এমন হয়, তা হলে স্থানীয় বাজারে যা বিক্রি হয়, তার কী অবস্থা? সেগুলোও পরীক্ষা করা দরকার।

এই বিষয়ে বিস্তারিত জানতে এফএসএসএআইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে দেশটির সংবাদমাধ্যম ডেকান হেরাল্ড। তবে কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কোনো জবাব পাওয়া যায়নি।

এর আগে, হংকংয়ে ভারতীয় দুই কোম্পানির গুঁড়া মসলায় ক্যানসার সৃষ্টিকারী রাসায়নিক ইথিলিন অক্সাইডের উপস্থিতি পাওয়া যায়। এরপর ভারতীয় কোম্পানি এমডিএইচ ও এভারেস্ট স্পাইসেসের গুঁড়া মসলা বিক্রিতে হংকং ও সিঙ্গাপুর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে বলে গত ২৩ এপ্রিল এক প্রতিবেদনে জানায় ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ০৬:৪৫ | শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com